ডিজিটাল মার্কেটিং বদলে দিয়েছে তরুণ উদ্যোক্তা সায়েমের ভাগ্য


মুক্তির আলো প্রকাশের সময় : ২৬/০৫/২০২৩, ৮:১৭ অপরাহ্ন
ডিজিটাল মার্কেটিং বদলে দিয়েছে তরুণ উদ্যোক্তা সায়েমের ভাগ্য

আবু সায়েমের দেখানো পথে হেঁটে এলাকার এক হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী সাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন আয় করছেন। আবু সায়েম ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং বা বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাজ করে এখন বার্ষিক আয় করেন প্রায় ১০ লাখ। তিনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে আবু সায়েম। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। মা আরজিনা বেগম গৃহিণী। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সায়েম পঞ্চম।

সায়েমের বাবা মারা যাওয়ার পর পুরো পরিবারে অভাব নেমে আসে। তখনই কিছু করার ইচ্ছা শুরু হয় তার। তারপর ঝুঁকে পড়েন ইন্টারনেটে। সারাদিন গুগল ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে ঘেঁটে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ধারণা রপ্ত করতে থাকেন।

রংপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সে সপ্তম সেমিস্টারে পড়ালেখা করা আবু সায়েম ২০১৩ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৪.৩১ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০১৫ সালে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পান জিপিএ-৩.৫০। কোনো প্রশিক্ষক ছাড়াই ফ্রিল্যান্সিং রপ্ত করা সায়েমের ইচ্ছা পড়াশোনা শেষ চাকরি হিসেবে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নেবেন।

আবু সায়েম বলেন, পরিবারে আমরা দুই ভাই ও চার বোন। কিন্তু আমার দায়িত্ব একটু বেশি। পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে এখন মাসে আমার আয় লাখের কাছাকাছি। বছর শেষে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করি। এ আয় থেকে পরিবারের দেখভাল ও ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে বোনের বিয়ে দিয়েছি। গঙ্গাচড়ায় ৫ শতক জমিও কিনেছি।

বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানিয়ে সায়েম বলেন, বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং শিখুক। শুধু পড়াশোনা না করে পড়ালেখার সাথে সাথে নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং সুবিধা নেওয়া উচিত। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব।

সায়েম শহরের পাশাপাশি তার নিজের গ্রামের তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং শেখাতে শুরু করেছেন। রংপুর বিভাগীয় নগরীতেও নিজের নামে গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণকেন্দ্র। এখান থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), লিড জেনারেশন, সিপিএ মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউটসোর্সিংয়ে বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

উদ্যোক্তা আবু সায়েমকে স্বাগত জানিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার অ্যান্ড সায়েন্স বিভাগের প্রধান ড. মিজানুর রহমান জানান, ছাত্র অবস্থায় যদি কেউ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়, এটি হবে তার জন্য বাড়তি আয়ের পথ। এখন তরুণদের একটি বড় অংশ ফ্রিল্যান্সিং শিখছে। করোনা-পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সিং বেকার যুবকদের আশার আলো দেখাতে পারে।