৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াই, টাইব্রেকারে স্বপ্নপূরণ মোহামেডানের


মুক্তির আলো প্রকাশের সময় : ৩০/০৫/২০২৩, ৮:০৪ অপরাহ্ন
৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াই, টাইব্রেকারে স্বপ্নপূরণ মোহামেডানের

কুমিল্লার শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে এক টান টান উত্তেজনাকর ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ও মোহামেডানের মধ্যকার ১২০ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে টাইব্রেকারে জয় তুলে নিয়েছে সাদা-কালোরা।

মঙ্গলবার (৩০ মে) ঢাকা ডার্বির নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে ড্র হয়। এরপর অতিরিক্ত সময়েও স্কোরলাইন ৪-৪ থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে ৪-২ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে ১৪ বছর পর আবার ফেডারেশন কাপের শিরোপা ঘরে তোলে মোহামেডান।

বদলি নামা গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপুর টাইব্রেকারে দুটি ভালো সেভ থাকলেও এ ম্যাচে মোহামেডানের আসল নায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এ ফরোয়ার্ড একাই ৪ গোল করে আবাহনীকে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত করেছেন।
 
১২ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দুই ক্লাবের মুখোমুখি দেখা। আর ফেডারেশন কাপের হিসেবে ১৪ বছর পর শিরোপার লড়াই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে। সবশেষ ২০০৯ সালে এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল তারা। যেখানে টাইব্রেকারে ৪-১ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল মোহামেডান। সে প্রতিশোধ তুলে নেয়ার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল আকাশি-নীলদের সামনে। সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স বিচারেও বেশ এগিয়ে তারা। প্রতিপক্ষ মোহামেডান তো গত চার বছর তাদের বিপক্ষে জয়ই পায়নি।
 
এদিন আবাহনী শুরুটা করেছিল ফেভারিটের মতো। ম্যাচের প্রথমার্ধে তারা এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। ১৫ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস।
 
প্রথমার্ধে ব্যাকফুটে থাকা মোহামেডান জ্বলে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। আরও স্পষ্ট করে বললে দিয়াবাতে বিরতির পর ফিরে আসেন জ্বলন্ত আগুন হয়ে। ৫৫ মিনিটে প্লেসিং শটে আবাহনীর গোলরক্ষককে পরাজিত করে মালির ফরোয়ার্ড ব্যবধান কমান। এর চার মিনিট পর আবারো জালভেদ করে দলকে ফেরান সমতায়। তাতে জমে ওঠে ম্যাচ। লিডে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে আবাহনী। ৬৫ মিনিটে আকাশি-নীলদের লিডে ফেরান এমেকা।
 
কিন্তু মোহামেডান অধিনায়ক দিয়াবাতে দমে যাওয়ার পাত্র নন। ৮৩ মিনিটে নিজে হ্যাটট্রিক তুলে নিয়ে আবার দলকে ফেরান সমতায়। তাতে নির্ধারিত সময়ের খেলা গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে। সেখানেও বাজিমাত করেন মালির ফরোয়ার্ড। অবশ্য তাকে পেনাল্টির সুযোগ করে দেয় আবাহনী। তার সফল স্পটকিকে ১০৭ লিডে ফেরে মোহামেডান। গ্যালারিতে উৎসবে মেতে ওঠে আগে সাদা-কালো সমর্থকরা।
 
তবে তাদের উৎসব শেষদিকে এসে মাটি করে দেন রহমত মিয়া। ১১৮ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার জোরালো শটে বদলি নামা গোলরক্ষক বিপুকে পরাস্ত করে বল জড়ান জালে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে ফলাফল ড্র থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে শেষ হাসি হাসে মোহামেডান। টাইব্রেকারে শাহরিয়ান ইমন বাদে সাদা-কালো শিবিরের সবাই বল জালে জড়ান। অন্যদিকে আবাহনীর পক্ষে স্পটকিক নিতে এসে ব্যর্থ হন দুই বিদেশী রাফায়েল আগুস্তো ও কলিন্দ্রেস। তাতে শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যায় আবাহনীর।