যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ প্রত্যাখ্যান করল চীন


মুক্তির আলো প্রকাশের সময় : ০১/০৬/২০২৩, ৩:৪৪ অপরাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ প্রত্যাখ্যান করল চীন

সিঙ্গাপুরে আসন্ন প্রতিরক্ষা সম্মেলনে চীনা ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বেইজিং৷ দক্ষিণ চীন সাগরে সাম্প্রতিক উত্তেজনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে উভয় দেশ৷

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কের অবনতি যথেষ্ট উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ সত্ত্বেও চীনের সঙ্গে সংলাপের পথ বন্ধ করতে চায় না ওয়াশিংটন৷ অথচ, সম্প্রতি চীন উভয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সরাসরি সাক্ষাতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে ভিন্ন বার্তা দিয়েছে৷

গত মঙ্গলবার (৩০ মে) দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর একটি চীনা যুদ্ধবিমানের পাইলট এক মার্কিন নজরদারি বিমানের সামনে দিয়ে বিপজ্জনকভাবে চলে যাওয়ার ফলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন সরাসরি চীনের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী৷ তবে, চীনের অভিযোগ, মার্কিন বিমানটি একটি সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকায় প্রবেশ করেছিল৷

বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বর্তমান কঠিন পরিস্থিতির জন্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করেছেন চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র৷ তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসন একদিকে যোগাযোগ আরও নিবিড় করার কথা বলে, অন্যদিকে তারা চীনের উদ্বেগ উপেক্ষা করে কৃত্রিম বাধা সৃষ্টি করে৷ ফলে পারস্পরিক আস্থার ক্ষতি হয়৷’ এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন চীনের ‘প্ররোচনামূলক’ আচরণের সমালোচনা করে বেইজিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের এক নজরদারি বিমানের কাছ দিয়ে চীনা বিমানের ‘অপ্রয়োজনীয় আগ্রাসী বিচরণ’ সম্পর্কে ওয়াশিংটন আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন৷ অস্টিন বলেছেন, তিনি আগেও সংকট এড়াতে বিশাল সামরিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে সংলাপের পথ খোলা রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন৷

এশিয়া মহাদেশে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের ঠিক আগে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে এমন শীতল সম্পর্ক বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ আগামীকাল শুক্রবার (২ জুন) থেকে রোববার পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ‘শাংগ্রি লা ডায়ালগ’ নামের এই সম্মেলনে ৪৯টি দেশের শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা, সামরিক অফিসার, কূটনীতিক, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও প্রতিরক্ষা কোম্পানির কর্ণধাররা মিলিত হচ্ছেন৷

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন৷ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন৷ তবে, এই সম্মেলন চলাকালে লোকচক্ষুর অন্তরালে অনেক শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিরল সুযোগ বিশেষ গুরুত্ব পায়৷

ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা এবং উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি এশিয়া তথা বাকি বিশ্বের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷ দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে চীনসহ একাধিক দেশের মধ্যে সীমা নিয়ে বিরোধও গুরুত্ব পাচ্ছে৷ রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কোনো প্রতিনিধি সিঙ্গাপুরের।

সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না৷ তবে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনার সম্ভাবনা বাতিল হলেও সম্মেলনে তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ ও সংলাপের সম্ভাবনা রয়েছে৷